আধুনিক জীবনে অসুখের শেষ নেই। সে অসুখ সারাতে হাজারও ওষুধ। সারাদিনে মনে করে নিয়ম মেনে ওষুধ খাওয়ার চক্করের যেন শেষ নেই!
তবে যদি রোগ প্রতিরোধের উপায় আরও বাড়ানো যায়, তা হলে অসুখ-বিসুখের হাত থেকে খানিক রেহাই পাওয়া সম্ভব। আমাদের চারপাশেই কিন্তু রয়েছে এমন এক প্রাকৃতিক উপাদান যা আপনাকে রাখবে সুস্থ।
জীবনের বেশির ভাগ নাছোড় অসুখের সঙ্গে লড়ে যাওয়ার শক্তি জোগাবে। হুইটগ্রাস বা গমের কচি চারার রস এমনই এক বস্তু। ভরপুর গুণের এ গমের চারার রস বানানো খুব একটা কঠিন নয়।
গমের কচি চারা জোগাড় করুন। চারাগুলো দুই ফালি করে নিন। ভালো করে ধুয়ে জুসারে পুরুন। বাড়তি কিছুই মেশাবেন না। এ রস ফ্রিজে জমিয়ে রাখতে পারেন। উপকার পেতে প্রতিদিন খালি পেটে পান করুন এ রস। আনন্দবাজার পত্রিকা।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাকৃতিক উপাদান থেকে পাওয়া নানা প্রতিরোধকে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। গম চারার রস মানেই সতেজ ক্লোরোফিল। আর এটি সবুজ গাছ ছাড়া অন্য কিছুতেই পাওয়া সম্ভব নয়। নানা খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ এ প্রাকৃতিক ঘাসে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, বি কমপ্লেক্স ও কে। এছাড়া প্রোটিন ও ১৭ ধরনের অ্যামাইনো এসিড রয়েছে এ চারায়। প্রতি ২৮ গ্রাম রসে রয়েছে ১ গ্রাম প্রোটিন। ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ, আলসার, কানের জ্বালাপোড়া, ত্বকের পুনর্গঠন ইত্যাদির চিকিৎসায় ক্লোরোফিল বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ রসের ৭০-৭৫ ভাগই হল বিশুদ্ধ ক্লোরোফিল। ক্লোরোফিলে রয়েছে অনেক উপকারী উৎসেচক। এগুলো কোষের সুপার অক্সাইড র্যাডিকেলগুলোকে ধ্বংস করতে পারে। ফলে বার্ধক্যজনিত ছাপ শরীরে সহজে বাসা বাঁধতে পারে না। ক্লোরোফিল প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়ালও। শরীরের ভেতরে ও বাইরে তা অপকারী ব্যাক্টেরিয়া নির্মূল করে।
ক্লোরোফিল তৈরি হয় আলোর মাধ্যমে। আলোর ভেতরের শক্তিও এর মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। গমের চারার ক্লোরোফিল সরাসরি মানবদেহে মিশে যায়।
এখনও পর্যন্ত এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। শরীরে জমে থাকা নানা ওষুধের ক্ষতিকারক অবশিষ্টাংশও নির্মূল করতে পারে। এ চারাগমের ঘাসের রস হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ডায়াবেটিসের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিডনিকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এটি। সাইনোসাইটিস চিকিৎসায় ক্লোরোফিল বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। হাড়ের সমস্যায় কাজ করে এ রস। এতে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম আছে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে পারে গমের ঘাসের জুস।